বৃহস্পতিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯

নির্বিকার

ভোরের সুর্যের ফিকফিকে হাসি
রোদ হয়ে আসে,আমার গায়ে লাগে
দুর্বাঘাসের স্বচ্ছ মুক্তো রাশি রাশি
উড়ে যায় আকাশে রোদের উত্তাপে
শালিকেরা সব ছুটে বহুদুর জীবিকার সন্ধানে
আমি নির্বিকার মনে পড়ে থাকি নকশীকাঁথার ময়দানে
জেগের উঠার আপ্রাণ চেষ্টা পাঁচটি বছর ধরে
কিন্তু পারি না।
সব চেষ্টা অপচেষ্টা হয়ে বেঁচে থাকে
একরাশ ঘৃণা ও ক্ষোভ নিয়ে বেঁচে থাকি আমি।

রবিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৮

শাপলা থেকে আসে রক্তের গন্ধ

শাপলা থেকে আসে রক্তের গন্ধ,
সোহরাওয়ার্দী থেকে গোলাপের সুভাস। 
রক্তের গন্ধে আমার শ্বাসনালী বন্ধ
গোলাপ যেন চরম উপহাস।
আমার শিরায় বহে চেতনার রক্ত,
হৃদয়ে বেয়াদবির ভয়;
তাই মুখ থাকিতেও হয়েছি মূক,
সরাসরি কিছু নাহি কয়।
বুলেটের ঠাঁ ঠাঁ শব্দ আজও শুনতে পাই,
শিওরে উঠি আমি বারবার।
কানে ধরার দৃশ্যও ভাসে কল্পনায়
ভবিষ্যতে ধরতে হবে কি আবার?
শহীদের রক্তস্রোত ফুসে উঠে যেন
করিতেছে ভীষণ চিৎকার
"আজিকার জন্যই কি দিয়েছিলাম প্রাণ?
সত্ত্বাকে বেচে দেওয়া কী দরকার!"
অতঃপর আর্তনাদে ক্লান্তি আসে
কেউ শুনেনা,শহীদেরা স্বর্গে ফিরে যায়,
চিরসুখে ঘুমিয়ে পড়ে আবার।
কিন্তু ঘুম আসে না আমার,
জেগে থেকে এপাশ ওপাশ করি,
উদাস মনে আকাশের দিকে চেয়ে থাকি
ইচ্ছে করে না এই পৃথিবীতে থাকবার।

শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১৮

অন্তিম বার্তা

একদিন, দু'দিন,
কেটে গেল হাজার দিন।
এখনোও আছে সময়,
আসিলে আসো নয়তো নয়।
আমি চলে যাচ্ছি।
হয়তো কাল দেখতে পাবে,
কাফনে মোড়ানো শীতল শিথিল দেহ।

যদি একবার বলো

গোধুলীর সোনালি অরুণ,
শুক্লপক্ষের রুপালি চাঁদ,
পাঠিয় দেব তোমার জন্যে।
ঘুঘু জোড়ার গুনগনানি,
কুকিলেরই কুহুতান;
রাখালের বাঁশির মনোরম সুরে
মন যে করে আনচান।
সুরেরটানে হাওয়ায় ভেসে আসবে তুমি নর্তকী সেজে,
অথবা সব সুরেরই মিলিত রুপে পাঠিয়ে দেব তোমার কাছে।
একটি পুকুরের দুটি পদ্ম,
ফিসফিসিয়ে 'আই লাভ ইউ' বলে,
হিজল গাছের নিচের ঝোপটি আজ
ভরে গেছে মুক্তো ফুলে।
শুভ্র ফুলেরই গাথা মালা,
পাঠিয়ে দেব তোমার জন্যে।
গোলাপের সবটুকু লাল,
এক পৃথিবীর সব সবুজ
নীল আকাশের পুরোটা নীল,
পাঠিয়ে দেব তোমার জন্যে।
পাতাল দেশের ঝিনুক-মুক্তো,
দীপ্যমান সন্ধ্যাতারা,
এনে দেব তোমার হাতে,
যদি একবার বলো পদ্মফুল দুটি 'যা বলে ছিল'।

শুক্রবার, ৯ মার্চ, ২০১৮

প্রেম ফিরে গেছে তার বাড়ি

গাছের ডালে ঘুঘু জোড়াটি কিংবা
ঘরের চালায় কবুতর,
ক্ষুদ্র কুটিরে বাবুই যুগল
থাকছে সুখে জীবন ভর,
মাটির শোকে মেঘ যে কাদে
বৃষ্টি নামে অঝোর-ঝর;
আকাশ নাকি প্রেমে পড়িয়া,
মিলেছে গিয়ে সমুদ্দুর।
রাধা নাকি কৃষ্ণ প্রেমে,
ছাড়ল সুখের প্রাসাদ খানি;
লাইলীর প্রেমে মজনু কাষ্ঠ,
এটা আমরা সবাই জানি।
জেনেছি, শুনেছি,যত্তসব কল্পনা,
সবই কলমের বাহাদুরি,
জানো সত্য প্রেম নেই ধারাতে,
প্রেম ফিরে গেছে তার বাড়ি।

মঙ্গলবার, ৬ মার্চ, ২০১৮

অন্তঃ সংলাপ

আমি কিছুই বলবনা,
জিজ্ঞেস করো ঐ শিমুল গাছটিকে,
রেললাইনের পাশে যে দাড়িয়ে আছে নীরবে,
কিংবা পার্কের বেঞ্চিগুলোকে,
অথবা ফুসকাওয়ালা মামাকে,
আমার টাকা তার হাতে হয়েছে কি বিনিময়,
আর কাওকে যদি বিশ্বাস না হয়
তবে তাকাও আমার চোখের দিকে,
সাদা পর্দার ওপারে জমে থাকে রক্ত কি বলছে?
তারা কি গভীর রাতে কান্নার সাক্ষী নয়,
হ্যা,এখনো কাঁদি, বিশ্বাস করো যদি।
জীর্ণ মুখমন্ডল কি বলছে না আমি তুমিহীনতায় ভুগছি
আমার হৃদয় কষ্টচাপা পড়ে আজ পাথর
আর তোমার পাথর কি আজও হৃদয় হতে পারেনি ?

শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮

একতান

আমার এক হাতে অসি, অন্যত্র বাঁশি,
কোনটা রাখব, কোনটা ফেলব ভাবি দিবানিশি,
অসি নিতান্ত প্রয়োজনীয়,
যাহার অসি আছে তাহার থাকেনা কোনো ভয়,
ধু ধু মরুভূমির মত হদয়,পাষাণময়;
চির বিতারিত হয় প্রেম,
যেন আত্মা হয় পাষন্ড পামর;
পৃথিবীর কালো ইতিহাস,রক্তাক্ত প্রান্তর
সবই অসির অতি ব্যবহার, অনাচার।
ফেলে দিলাম সেই অসি,
নিরেট হাত হলো শুন্য
উভহাতে ধরিলাম বাঁশি,
তুলিলাম সুর, মৃদু মনোহরী,
এই সুর কখনো রক্তাক্ত করে না রণাঙ্গন,
যেই সুরে বিমোহিত হয় মন,
যেই সুর কর্ণগোচর হলে হৃদয় হয় প্রেম পাগল,
অভিন্ন সুরের মোহিনী জাদুতে এক করে দেয় সব মানবকে।

নির্বিকার

ভোরের সুর্যের ফিকফিকে হাসি রোদ হয়ে আসে,আমার গায়ে লাগে দুর্বাঘাসের স্বচ্ছ মুক্তো রাশি রাশি উড়ে যায় আকাশে রোদের উত্তাপে শালিকেরা সব ছুটে...